Skip to main content

ফরাসি বন্দরের মেয়েটাকে লেখা চিঠি

ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ 0

গুলটি ,

জানো , কাল আমার বই বেরোবে ।
হিজিবিজি ভরা পাতাগুলো 
ওদের মনে ধরেছে ।

জানো , কাল আমি মঞ্চে উঠবো ।
ওই ভিড় ঠেলে ওপরে 
ওপর থেকে দেখবো শ্রোতাদের ।

জানো , কাল খুলে যাবে কিছু রহস্য ।
তাই ভয় হচ্ছে 
কে যে কি বিধান ছুড়ে দেয় ।

তুমি আসবে তো ? 
ব্যস্ততা দিন দিন গ্রাস করেছে আমায় 
তাই বাড়ি গিয়ে বলে আসা হয় নি আর ।

কিছু বললে না তো !
রাগ করেছ 
নাকি অভিমান এই মানুষটার ওপরে ?

আমি অপেক্ষা করে যাচ্ছি ।
ধোঁয়াশা কেটে যাবে সব 
সব আবার ঠিক হয়ে যাবে ।

হয়তো দিনটা কালই 
তোমার ভাষায় ,
বি পজিটিভ ...

ইতি,
তোমার গোলু

১১আগস্ট ২০১৮ 
দুপুর ২:৩৬

ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ১

গুলটি ,

টু স্টেটস দেখেছো ? 
আমাদের অবস্থা আজ ওই রকম ।
ভারতের বুকে একই রাজ্যে বসে আছি । 

তবু , অসহায় ।

আমার খুব মনে হয় জানো 
একজন অভিভাবক যদি বুঝতো ,

আমাদের অবস্থা ।

মেঘের চোখে জল নেই 
আকাশ তবু ভিজে যাচ্ছে ।

বাজারে ভিড় করে আছে 
কলতলা থেকে বেড়িয়ে আসা 

শ্রোতার দল ... 

মাছের থলিতে গু ধোয়া পাছার গন্ধ 
তবু ফিরে ফিরে আসছি 
কলতলা ঘেঁষা এদো গলিতে 

চিকেনের লাইনে 
ফরাসি বন্দরের মেয়েটা 

ওরফে 

তুমি ... তার খোঁজে ।

ইতি 
গোলু 

১১আগস্ট , ২০১৮ 
বিকেল ৫:৪৫

ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ২

গুলটি ,

কাল যখন মঞ্চে উঠলাম তখনও 
অনেক কিছুই ভেবে যাচ্ছি । 

তারপর 

মোড়ক খুলে দিল ওরা । 
সবাই দেখলো বহুরূপীর মুখ ...
মঞ্চে আমি তখনও দাঁড়িয়ে । অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ।

তোমার ...

ঠিক যেমন ভিড় করে পাবলিক 
সকাল সকাল 
পাবলিক টয়লেটের বাইরে ।
অতীতের সব জমে থাকা 
বেড়িয়ে এল 

ধিরে ধিরে ....

ইতি 
গোলু 

১৩ই আগস্ট 
দুপুর ২:১৭

ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ৩

গুলটি ,

কফি হাউসের তিনতলাটা ভিড়ে ভিড় ।
অনেকেই আড্ডা জমিয়েছে সেখানে 
দেখে একটাই কথা মাথায় এলো -- 
ডাল আর ভাত ; চা আর চিনি ; 
আয়না আর চিরুনি অবিচ্ছেদ্য যেমন ,
ঠিক তেমনই জোড়ায় জোড়ায় ফুটে থাকা 
ফুল ওদের টেবিল জুড়ে ।

কোন রকমে একটা জায়গা পেলাম ,
ট্রেনের সিট দখলেও এমন সমস্যা ছিল না ।
আবার মনে উঁকিও দিচ্ছিল 
আমাদের শেষ ছবিটা 

কবিতার ভাষা 

আঁকতে পারে ...

আর স্মৃতি 

চলমান ছবি ....

আজ ওই ছবির কিছুটা মনে পড়ল 
আমাদের শেষ ছবিটা 
আমার পিঠে কবিতার ভার 
আর বুকে ছবিটা 

শেষ ছবিটা 

কষ্ট আর যন্ত্রণাময় ।

তবু বেড়িয়ে আসতে চায় 
দুজনেই ... 
কবিতা হোক আর প্রেমের বিরহব্যথা 

ঠিক কষা পায়খানা যেমন ...

ইতি 
গোলু 

১৩ই আগস্ট 
রাত ৮:৫০


ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ - ৪

গুলটি ,

আজ হঠাৎ এত রাতে লিখতে বসলাম । 
জানি আমি এখন পর , 
তবু একবার জানবে না কেন ? 

ব্যর্থতা ।

জীবনে সবই তো তোমায় বলে এসেছি । কোন দিন আনন্দে 
আবার চরম দুখেও তোমাকে পাশে পাওয়ার পর থেকে তোমাকেই ,
শুধু তোমাকেই আঁকড়ে ধরেছি ।

অভ্যাসটা পুরোনো । 

চুপ করে থাকি এখন , তবু কোনকিছুই ভুলিনি । তাই তোমাকে জানাতে লিখতে বসেছি আবার ।

ব্যর্থতা ।

কবিতা আজ আমার নয় । সবার , কিন্তু আমার নয় । আমি তো কোন অন্যায় করিনি 
স্বপ্ন দেখেছিলাম শুধু , ভালোবেসে ।
আচ্ছা ! ভালোবাসা , স্বপ্ন দেখা কি খুব অপরাধ ? নাকি আমি সত্যিই কোন কিছুর অযোগ্য । চুপ থেকো না আর । বিগত তিনটে চিঠি , উত্তর মেলে নি একটারও ।
আজ চুপ থেকো না । উত্তর দিও প্লিস , এই পৃথিবী কি আমার যোগ্য নয় ? 

ভেবে দেখো তো , তোমাকে সেরা করতে আমি কি না করেছিলাম । তোমার যে কোন সমস্যায়
আমি কিভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলাম । ঠিক একই ভাবে কবিতাকে জানতে আমি বিনয় থেকে জীবনানন্দ , সুনীল কিংবা শক্তি কিংবা মলয় ; অজিতেশ অথবা জয় অথবা শ্রীজাত -- সবাইকে পড়েছি ।

তবু কলম হাতে লিখতে বাধ্য হচ্ছি আজ তোমায় 

ব্যর্থ । আমি ষোল আনা ব্যর্থ । 

প্লিস , প্লিস গুলটি উত্তর চাই এইবার । আমারও জানা দরকার কতটা নিঃস্বার্থ হলে সফল হওয়া যায় 
আর কতবার মরে মরে ফিরে আসলে , 
ভালোবাসা ধরা দেয় ?

আমি তো বেইমান নই । তবু কেন জীবনে দাম মেলে না আমার ? খেয়াল রাখা অথবা যত্ন করা পৃথিবীতে অভিশাপ ?

প্লিস লিখ এইবার শেষবার, সবটুকু ছিড়ে ফেলার আগে ।

আমার ঠিকানা :
অভাগা @ তোমার ভালোবাসা . কম ।

ইতি 
গোলু 

২৩সে আগস্ট 
রাত ১২:২৩


ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ - ৫

গুলটি , 

আজ সকাল এসেছিল আমার কাছে 
কি বললো জানো এসে ! তুমি নাকি খুব আনন্দে আছো 
শুনে মনটা আনন্দে ভরে উঠল ।
আসলে তুমি ভালো থেকো রোজ আর সমস্যা যেদিন 
জড়িয়ে ধরতে এগিয়ে আসবে , আমাকে জানিও একবার 
হাত দুটো কেটে ফেলবো , সমস্যার ।

আমার কথা জানতে কেউ চায় না 
তাই সবার মত ঘাড় নেড়ে দিই আজকাল আর 
খুব চেনা কেউ হলে , বলি , ভাল আছি 
খারাপটা মুখ দিয়ে বেরোয় না ।
তবে এখানে তো কাছের কেউ নেই , দুরেরও নেই 
হৃদয়ের আছে 
তাই চুপিচুপি বলছি ভাল নেই একদম 
আমি ভাল থাকতে ভুলে গেছি ।

সামনে পুজো । ভাবছি এবার আর নেশা করবো না ।
তারচেয়ে অনুমতি দাও তো , অধিকার থাকলেও দেখাবো না 
অভিমানে 
দূর থেকে তোমার হাসি ঢাকা মুখটা 
দেখে দেখে কাটিয়ে দিতে চাই ।

জগদ্ধাত্রী আমায় ডাকবে না কোনদিন 
ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি লেখাগুলো 
কোনদিন প্রাপ্তিস্বীকার হবে না ।
বিসর্জন ঘাটে তাকিয়ে 

ডুবছে ... ডুবছে ... 
আসছে বছর আর হবে না 
আমার  মনে হয় এটাই শেষ । 

কিগো গুলটি
গোলুর কাছে একদিন আসবে না 

শেষদিন ... বিজয়া প্রণাম ।

ইতি 
গোলু 

২৩সে আগস্ট 
বিকেল ৬:৩৭


ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ - ৬ 

গুলটি , 

প্রভাতফেরির গান মানেই শিউলি কুড়িয়ে আনা 
শিউলি মানেই শরতের আনন্দ 
 শরৎ মানেই উৎসব 
আর উৎসব মানেই তো ভালোবাসা ।
ঠিক বছরের কাঁটা ধরে ফিরে যাওয়া পথে 
সেই ভুলে যাওয়া বাসস্টপ আসে 
নামতে গিয়েও হয়নি নামা 
আর আজ দেখো নেমে যাওয়াটাও দুরহ দুষ্কর ।
আর তারপর হাসি , ঠাট্টা আর আড্ডার মেলায় 
উড়ে যাওয়া নিকোটিনের শেষ ধোঁয়ায় 
হৃদয় ভেঙে যাওয়ার আগে 
কত প্রেম , অবিরাম বকবক আর কথাবলা 
মনে আছে তোমার ? 
আমি তো আজও সাজিয়ে তুলে রেখেছি সব 
যত্ন করে , মাটি থেকে অনেক দূরে 
তুমিও কি তাই ...?
না হলে থাক সেটুকু না হয় গোপনে 
অমূল্য বলতে আমার ঐটুকুই 
আর বাদবাকি সব ....

উহ্য থাক । বাকি ওসব আজ উহ্য থাক ।

ইতি 
গোলু 

২৯সে আগস্ট 
সকাল ৯:১০

ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ৭

গুলটি ,

সমুদ্রের নীল জলের ভিতরে চেয়ে দেখো 
মুক্ত পেলেও পেয়ে যেতে পারো ।
অনন্ত গভীরে যে সম্পদ পড়ে আছে 
সে তো সবার নয় 
তবু 
দুর্ভাগ্য এটাই , যার জন্য আগলে রাখা এত সব 
সেই আবর্জনা ভেবে ফেলে দেয় আপনজনের শব
কি ভাঙলো আর কিই বা হারালো হিসাব খাতায় ওঠে না 
পদ থাকলেও সব অসম্পূর্ণ 
যখন নিজেতে আর  মন লাগে না ।

ভাবে , হয়তো কাল ভালো হবে 
কাল সূর্য উঠবে আবার 
আবার খুলবে নতুন করে জীবনের পাঠশালা ।

তারপর 
পৃথিবী ঘুমিয়ে পড়লো , সূর্য উঠলো না 
কারন 

সূর্য আজ আমার প্রতিবেশী তারা ।

ইতি 
গোলু 

৩০সে আগস্ট 
রাত ৮:৪৩

ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ৮

গুলটি ,

শুনেছিলাম কবিতারা অমর , যেমন দেবতা 
তাই রোজ সকালে কবিতায় লিখি প্রার্থনা 
এই ভেবে যে কবিতাই তোমার আমার 
ভাগ্যমাতা ।
শরীর আমার পর্ণমোচি , আয়ুগুলো ঝড়ে প্রতিদিন 
বার্থডের ছুরিটা কেক কাটে না , 
কাটা পড়ে এক একটা ভাবনা ।
হয়তো পরের জন্ম আছে , কিন্তু তার জন্য 
মরন হতে হবে দুই চেতনার 
কিন্তু 
মৃত্যু মানেই তো কষ্ট আর তোমাকে কষ্টের দুহাত 
ছুঁয়ে যাবে -- অসহ্য ভীষণ ।

তাই কবিতার খাতায় কবিতার বদলে মৃত্যুর আবেদন 
চিঠি আসবে একদিন 
তারপর , সবার ভিতরে আমিও থাকব
তোমারও ভিতরে ঢুকে যাবো 
এই রাস্তা , বাড়ি , পোড়া টায়ার , গোবরের মাছি 
অথবা বাসা হীন পিঁপড়ে , ফিরে যাবে 

আমিও ফিরবো 
তবে ভিতরে ভিতরে তোমাদের সকলের ।

ইতি 
গোলু 

৩১সে আগস্ট 
দুপুর ৩:৪৯

ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ৯

গুলটি ,

সামনে হলুদ একটা ব্যাগ । ট্রেনে আমি । 
ট্রেনটা দৌড়াচ্ছে । দৌড়াচ্ছি আমি আর 
আমার আগে আগে দৌড়াচ্ছে হলুদ ব্যাগ । 

বাইরে আলো এখনো অনেক । কালো হয়নি একফোঁটাও ।
কালো মানেই কয়লা আর কয়লা কালো চুল তোমার 
কালো তোমার প্রিয় , তাই রোজ ফিরে আসো 
আমার রাত জাগা স্বপ্নে ।
আমার মন জানতে প্রতিদিন 
মাঠে মাঠে ঘুরে বেড়ায় , তুমি সূর্যের চোখে চোখ রাখো জানি 
তাই হলুদকে নিজের বানাতে চাই ।


সামনে হলুদ একটা ব্যাগ । ঠেসে ঠেসে ভর্তি করেছি 
এতদিন ধরে । তবু সব ভরা যায়নি 
ভরা হয়নি সেই এলমোনিয়াম ফয়েলে মোড়া খাবার 
সেই ঝুলন ঝোলা দুজনের পুতুল , তুমি আর আমি 

কালো ব্যাগটার সাথে ঘরেতেই মুলাকাত হবে
আমার ঘর ; আমাদের কি হবে না কোনদিন ? 

ইতি 
গোলু 

৩১সে আগস্ট 
বিকেল ৫:৫৮

ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ১০

গুলটি ,

প্রায় মাস এক পেড়িয়ে গেলে চিঠি লিখতে বসি আবার । 
অনেক দিন অপেক্ষা করেছি , অন্ধকার আজ কেটেছে জানো 
শিউলির গন্ধে আমি বছর ফিরে যাই । 
শিশির আর ঝড়ে না হাওয়ায় 
আমার দুচোখে তার নতুন ঠিকানা 
ভালোবাসা , এখন দেয় না কেউ 
সৃষ্টিগুলো তাই মাতৃহারা হয়ে মরতে চায় ।
পুজো আসছে , লক্ষ্মী আর স্বরস্বতীদের ভিড়ে তুমিও রেডি 
হ্যান্ডসাম কোন হাতে হাত রাখবে , 
রাত জাগা উল্লাস আর স্ট্যান্ডের ধারে ভেসে চলবে গঙ্গা 
তারপর একদিন হাওড়া ব্রিজ অথবা আর্মেনিয়ার ধারে 
বিসর্জন হতে আসা দেবীরা খুঁজে পাবে 
হাজার সাতাশীর লাশ আর কবিতা 
রামধনু মোড়া আকাশে নীল তারারা চোখ মারছে 
তোমায় 
আর সেপ্টেম্বর ষোলতে যে ছেলেটা জন্ম নিল 
তার আয়ু মাত্র এক মাস এক হপ্তা : 
কেকের ওপর খেয়াল কোরো ; 
ওগুলো চেরি নয় , কাটা পড়া মৃত রক্ত কনা ।

ইতি 
গোলু 


১লা অক্টোবর
দুপুর ২:৪০ 


ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ১১

গুলটি ,

আমার হৃদয়ে অনেক গুলো কবিতা আজ নাচছে 
তাদের কেউ কেউ সাদা কাপড়ে , 
           কেউ কেউ কাপড়খোলা , ন্যাংটা ।
কেউ কেউ বুক থেকে স্বাস নালির ভিতরে ঢুকে গেছে 
মিশে যেতে, প্রশ্বাসের বায়ু কনায় ।
তারা স্বাধীন , আকাশের পাখিদের মতো 
উড়ে যায় কবিতা , সূর্যের বুক চিরে 
           আমি সব দেখেছিলাম , ভাবনায় 
আর সেদিন থেকেই কি অসহ্য যন্ত্রনা 
 পেটের নিচের মাংসে 
মনে হচ্ছে কেউ আঘাত করছে ।
মুখ খুলে চিৎকার করতে পারছি না 
কবিতা বেড়িয়ে পড়বে ব্যাগ থেকে 
সাবধানে ঘুমাতে যাই 
       বিছানায় অগোছালো কবিতা 
       চাদরের ওপর , বালিশের সাদা কাপড়ে 
তাদের মাঝে শুয়ে গেলে , অসহ্য লাগে 
রাত গভীর হলে , জ্যোৎস্না কবিতার রাতে 
মঞ্চে ছুটে যাই : চাঁদের কবিতা , নক্ষত্রদের কবিতা শুনি 
আরও গভীর হলে গর্ভবতী হই 
পিছনের দরজা ঠেলে বেরিয়ে এলো কবিতা 
কোলে নতুন ভাবনা তার ।

ইতি 
গোলু 

১লা অক্টোবর
রাত ১১:৩০  


ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ১২

গুলটি ,

....এবং বিসর্জনের বাদ্দি বেজে উঠলো ।
ফরাসি বন্দরের ঘাটের আকাশটা তখন আবির মেখেছে ,
গঙ্গার জল দূর থেকে তাকিয়ে পল্টনের দিকে 
ওখানে কত উন্মাদনা আর এখানে 
একলা একটা ল্যাম্পপোস্ট 
গিলে খাচ্ছে গিলোটিন মনটাকে 
চন্দনের ছোঁয়া লাগছে না নগরের শরীরে 
অপেক্ষায় কিছু বাতি জলে ভাসছে 
একটু পড়ে ডুবে নিভে যাবে সব 
আবার ব্যস্ততায় গ্রাসিত হবে আমাদের সমাজ
জল তখনও হাওড়ার দিকে দৌড়াচ্ছে 
মিলনের সেই পুরোনো তৃষ্ণা বুকে নিয়ে 
ট্রেন ছাড়ছে তোমার ওখানে যখন 
তখন এখানে আমার বিসর্জন ....

ইতি 
গোলু 

২২সে অক্টোবর
সন্ধ্যে ৭:৫০


ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ১৩

গুলটি ,


খুব অসুস্থ ।

বিছানা আর বালিসকে নিজের প্রেমিকা ভেবে জড়িয়ে ধরছি বারবার । আসলে একটা সময়ের পর সবারই এমন একজনকে দরকার যার সাথে দুটো কথা বলা যায় । বন্ধু শব্দটি যখন শব্দকোষে পড়ে থাকে শুধু , তেমন একটা সময় ভেবে নিন । 

শুয়ে আছি নিজের ঠিকানায় । লোক আসছে , লোক চলে যাচ্ছে । আমি স্থিতিশীল । আসা বা যাওয়ার কেউই আমার জন্য নয় । তবু মুখটা তুলে দেখছি এলো কি না সময় । 

রাতের ঝাঁপ বন্ধ হলো । শব্দটা শুনলে মনে হয় একটা জেলখানার লকআপ । এইবার যন্ত্রণাটা বাড়বে , ছটফট করতে করতে লম্বা ঘুমের পৃথিবীতে হারিয়ে যাবো । 

একটা নরম কোলে মাথা এলিয়ে দিলাম । শরীরে খুব যন্ত্রণা । বামদিক ঘেঁষে আরো বেশি । হাতটা দিয়ে জড়িয়ে ধরে আছি তোমায় । মশা আসছে , গান শোনাচ্ছে । আমি চুপ করে থাকি । 

রাত গভীর হলে জোনাকিরা ছুটে আসে । শরীরটা ১০২ এ ফুটছে । মুখ সমানে ঈশ্বরীকে ডাকছে --- আমার ঈ কে । আজ সারারাত আমার পাশেই ছিল , তবু সারা দেয়নি একবারও । 

শরীরটা হিম হয়ে আসছে । হালকা মনে হল অনেকটা । তবু অসুখটা আসবে জানি । ফিরে আসুক আবার এটা আমিও চাই । 

কারন

অসুস্থ হলে ঈশ্বরী এসে ধরা দেয় আর সেরে গেলেই বালিশ হয়ে মেঘের দেশে হারিয়ে যায় ....

খুব অসুস্থ আজ থেকে আবার । ছুটির এই কদিন আমার সঙ্গেই তাই থাকবে আমার ঈশ্বরী 

ওরফে 

আমার মেঘ পিয়ন ।

ইতি 
গোলু 

২৩সে অক্টোবর
সকাল ০৬:২৫ 


ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ১৪

গুলটি ,

একাকীত্ব সুর তুলেছে মাতাল পূর্ণিমায় 
হালকা হাওয়ায় রূমঝুম শব্দ বাজে 
বাঁশ ঝাড়ের ওপারে ।
মাঝে মাঝে ভাবি তোমাকে হয়তো খুঁজে পাবো 
একদিন 
হয়তো উঁকি দেবে তুমি , আমার এই মেঘময় আকাশে 
আড়চোখা সূর্যের মত , কোন ভালোবাসার ইশারায় ।
ফরাসি বন্দরের ঘাটে সন্ধে নেমে আসে 
তরুণ তরুণী কপোত কপোতির ভিড় 
কথা বলে চুম্বনের চুম্বক ভাষায় ---

আর আমি 
অপেক্ষায় বসে নির্জন নৌকায়
গঙ্গার বয়ে যাওয়া লাল হলুদ স্রোতে 
আবছা কুয়াশা মেখে দুটো হাতে 

সামনের ফাঁকা স্ট্যান্ডে তখনও ভিড় 
মেঘেদের আনাগোনা 
আমিই শুধু হেঁটে চলেছি একটা মেয়ের জন্য 
মেঘ পিয়নের চিঠি বুকে জড়িয়ে ...
ফরাসি বন্দর তখনও বয়ে চলেছে সাথে সাথে 
আমারই কলকাতায় ।

ইতি 
গোলু 

২৩সে অক্টোবর
সকাল ১০:৪০


ফরাসি বন্দরের মেয়েটার প্রতি 
ভাগ ১৫

গুলটি ,

সূর্যের হিলিয়াম আজ ফুরিয়ে এসেছে 
অনেক কান্নার পর্ব পেরিয়ে এসেছি 
বালিশের তুলো ভিজে পেজিয়ে গেছে কতকাল 
আমি তোমায় দেখে গেছি তবু 
জীবিত চোখে ।
বিদায়ের ঘন্টা বাজলো 
একবার , দুবার , তিনবার 
সিলভার রঙের নদীর জল আজ বেশ ঘোলা 
মাটির ছোয়া পেয়েছি প্রথমবার ।
এর পরে এই ফরাসি বন্দরকে একলা ছেড়ে 
চলে যেতে হবে মোহনায় 
প্রকৃতির প্রতিটা ভাষায় এই সুরই বেজে যায় 
তরঙ্গ আসে , তরঙ্গ বয়ে যায় 
থেমে যায় হৃদ স্পন্দন ।
কিন্তু 
তোমার পরিচয় ! সে তো আজও অজানা 
ভবিষ্যৎ কি জানতে চাইবে না সেটা !
সেদিন কি উত্তর দেবো !
আমার প্রতিজ্ঞা , তোমায় অমর হতে দেখা 
আমার লেখায় , আমার কবিতায় 
তার কি হবে সেদিন !!

যাওয়ার সময় হল যখন 
যখন সন্ধ্যা তারা দক্ষিণপথগামী 
তখন অমর হচ্ছে অন্য কোথাও 
একটা ভালোবাসার কাহিনী 
সৌজন্যে 
আমি আর আমার  
ঈশ্বরের পবিত্র কলমখানা ।

ইতি 
গোলু 

২৩সে অক্টোবর
সন্ধ্যে ৭:০০


Comments

Popular posts from this blog

বোধনেই বিসর্জন

বোধনেই বিসর্জনের আয়োজন করতে ! ঢাক ঢোল বেজে উঠতো ! এ উৎসব তো আনন্দের নয় ! মৃত্যু এক প্রেমিকের । ভালোবাসার যোনি ছেদ করে ঢুকে যাবো চলুন ঘুরে আসা যাক তার সৃষ্টির গভীরে প্রেমিকার হাত ধরে কাটিয়ে দেওয়া ঋতুচক্রে চলুন না একবার প্রদক্ষিণ করে আসি আমরাও । ষষ্টি র পাতা লিখে গেছে কবিতায় অসহায় অবস্থা , মিলনের জন্য উদগ্রীব মন গঙ্গা টেমসে মিশুক না মিশুক , প্রেমিকের মন মিশে গেছে প্রেমিকার হৃদয়ে । মদের বোতলগুলো অসহায় ভাবে চেয়ে আছে একজন নেশাতুরকে আর কত নেশায় ভরাবে সে বিসর্জনের জলে হারিয়ে যেতে যার বোধন সামান্য রাম বা হুইস্কি কি আর সামলাবে তাকে !! সপ্তমী খুলে বসলাম এবার । প্রথম দেখা , প্রথম কথা , প্রথম বার রাত জেগে প্রেমিকাকে সাহস করে চুমু খাওয়া এ যেন এক অপরূপ সময় , একটা সম্পদ । সেদিন সে ভাবতে নারাজ ভবিষ্যতে কি হবে , আর যদিও বা উল্টে গিয়ে পাল্টে যায় কিছু সে দৃঢ় ভাবে বলতে প্রস্তুত , আই লাভ হার , সে শুধুই আমার -- অষ্টমীতে প্রেম , হৃদয় ছেড়ে শরীরে বাসা বাঁধে ঘাড় থেকে স্তন ছুঁয়ে ভালোবাসা জঠরে এসে দাঁড়ায় । নবমীর রাত বিষণ্ণ বসে । দুটো মেঘ আড্ডা জমিয়েছে রাত পেরোলেই ফাঁসি হবে পুলিশের ক